কিশোর অপরাধ: কারণ, প্রভাব ও করণীয়

মানবজীবন বিকাশ বিভিন্ন ধাপে বিভক্ত এবং প্রতিটি ধাপেই নিজস্ব বৈশিষ্ট্য ও গুরুত্ব বহন করে। শৈশব যেখানে নির্ভরতা আর নিষ্পাপতার প্রতীক, কৈশোর সেখানে স্বাধীন চিন্তা ও ব্যক্তিত্ব গঠনের সময়। অপরদিকে, পরিণত বয়সে একজন মানুষ তার জীবনে অভিজ্ঞতা ও প্রজ্ঞা দিয়ে সমাজে ভূমিকা রাখে। তবে বিভিন্ন ধাপের মধ্যে কিশোর বয়সটি সবচেয়ে সংবেদনশীল।

এই সময়ে কিশোরদের মনস্তত্ত্ব অত্যন্ত সূক্ষণ ও প্রভাবশীল থাকে। তারা তাদের ব্যক্তিত্ব গঠনের পথে অগ্রসর হয় এবং চারপাশের পরিবেশ, পরিবার, শিক্ষা ও নৈতিক মূল্যবোধ তাদের আচরণ গঠনে পুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু যখন এই সব বৈশিষ্ট্যের কোনো ভারসাম্যের অভাব ঘটে তখন কিশোরদের আচরণে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করে। ফলস্বরূপ, অনেক সময় তারা বিপথে পরিচালিত হয় এবং কিশোর অপরাধ সংঘটিত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। এখন প্রশ্ন হলো কিশোর অপরাধ কী? কিশোর অপরাধ হলো আইন অনুযায়ী, নির্ধারিত একটি নির্দিষ্ট বয়সসীমার (সাধারণত ১৮ বছরের কম) কিশোর-কিশোরীদের দ্বারা সংঘটিত কোনো অপরাধমূলক কার্যক্রম।

কিশোর অপরাধ একটি সামাজিক সমস্যা, যা কিশোর-কিশোরীদের বিকৃত মানসিকতা, পারিবারিক অবহেলা বা সমাজের নেতিবাচক প্রভাবের কারণে ঘটে। কিশোর বয়সে মানুষের মানসিক ও দৈহিক পরিবর্তন ঘটে। এসময় তারা বিবেককে প্রাধান্য না দিয়ে আবেগকে বেশি প্রাধান্য দেয়। এটি এমন এক সময়, যখন তারা শারীরিক বৃদ্ধি এবং মানসিক পরিপক্বতার দিকে এগিয়ে যায়। তাদের আচরণে আসে স্পষ্ট পরিবর্তন। আর এই আচরণগত পরিবর্তন প্রায়ই শুরু হয় ছোটখাটো বিষয় দিয়ে। উদাহরণস্বরূপ- মিথ্যা বলা, স্কুল ফাঁকি দেওয়া, পরিবার ও শিক্ষকদের নির্দেশ অমান্য করা প্রভৃতি। দুঃখজনক হলেও সত্য দিনদিন এই অপরাধ প্রকোট আকার ধারণ করছে এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাদের অপরাধের ধরনও পরিবর্তিত হচ্ছে। ধীরে ধীরে তারা চুরি, সহিংসতা, মাদক সেবন বা সাইবার অপরাধের মতো অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। প্রশ্ন হলো, কী কারণে তারা এধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে? এর পেছনে মূল কারণগুলো কী? কিশোর অপরাধের পেছনে বহু কারণ কাজ করে। এর মধ্যে প্রধানত পারিবারিক, সামাজিক এবং প্রযুক্তিগত কারণ সবচেয়ে প্রভাবশালী।

পরিবার হচ্ছে শিশুর প্রথম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আর পারিবারিক শিক্ষার মাধ্যমে শিশুর ভবিষ্যতের ভিত প্রতিষ্ঠিত হয়। শিশুরা অনুকরণ প্রিয় হওয়ায় পরিবারের সদস্যদের আচার-আচরণ তাদেরকে প্রভাবিত করে। যদি পরিবারে বাবা-মা’র মধ্যকার সম্পর্ক খারাপ হয়, দ্বন্দ্ব-কলহ লেগে থাকে, আর্থিক সংকট থাকে; তবে কিশোরেরা মানসিক চাপের মধ্যে পড়ে। আবার এই আধুনিক সমাজে বাবা-মা দুজনই চাকরিজীবী হওয়ার কারণে সন্তানের প্রতি মনোযোগি হতে পারেন না, আবার কখনও চাহিবা মাত্র অতি আদুরে সন্তানের সকল চাহিদা পূরণ করেন। এসকল কারণে কিশোরেরা বেপরোয়া হয়ে যায় এবং সঠিক ও ভুলের পার্থক্য বুঝতে পারে না। কিশোর অপরাধের আরেকটি বড়ো কারণ হলো অসৎ সঙ্গ। অসৎ বন্ধুদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কার্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে। আরও একটি কারণ হলো ইন্টারনেট ও প্রযুক্তির অপব্যবহার। কিশোরেরা এখন প্রযুক্তি এবং ইন্টারনেটের সহজলভ্যতার কারণে বিভিন্ন নেতিবাচক তথ্য ও উপাদানের সংস্পর্শে আসে। যেমন: সাইবার বুলিং, ফেক আইডি ব্যবহার, পর্ণগ্রাফি দেখা, অনলাইনে টাকা দিয়ে গেম খেলা এবং অনলাইন গ্যাংয়ের মতো অন্যান্য অপরাধে তারা জড়িয়ে পড়ছে। এভাবে কিশোরেরা না বুঝেই তাদের সুপ্ত প্রতিভাকে নষ্ট করে নানাবিধ

অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। এর ফলে সমাজে একটি পরিবারে যদি কোনো কিশোর অপরাধে জড়িয়ে পড়ে, তবে সেই পরিবারে মানসিক, আর্থিক ও সামাজিক সমস্যা সৃষ্টি হয়। অপরাধে জড়িত হওয়া কিশোরের অভিভাবকেরা সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হন। একাধিক কিশোর যদি অপরাধে জড়িয়ে পড়ে, তবে তা সমাজে অপরাধ প্রবণতা বাড়িয়ে তোলে। এটি সমাজের শান্তি ও নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে। অপরাধে জড়িয়ে পড়া কিশোরদের শিক্ষা জীবনে বড়ো ধরনের ক্ষতি হয়। তাদের জীবনে অপরাধের একটি দাগ থেকে যায়, যা তাদের ভবিষ্যৎ কর্মজীবনেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

বাংলাদেশে প্রচলিত কিশোর আইন, ২০১৩ (ঞযব ঈযরষফৎবহ অপঃ ২০১৩) কিশোরদের জন্য একটি বিশেষ আইন, যা শিশু আইন ২০১৩ নামেও পরিচিত। বাংলাদেশের কিশোর অপরাধ, অপরাধের ধরন, আদালত ও বিচার প্রত্রিয়া, কারাবাস এবং পুনর্বাসন, পুলিশ হেল্প ডেস্ক, অপরাধ ও বয়স অনুযায়ী শান্তির বিধানের মতো একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এই আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই আইনের আওতায় কোনো ব্যক্তি ১৮ বছর বা তার কম বয়সি হলে তাকে কিশোর অপরাধী হিসাবে বিবেচনা করা হবে। তাই এর বিচার প্রক্রিয়াও ভিন্ন। এই আইনের অধীন, শিশুদের জন্য পৃথক আদালত ব্যবস্থা (কিশোর আদালত) ও পুলিশ হেল্প ডেস্ক গঠন করা হয়েছে। যেখানে তারা তাদের অপরাধের জন্য বিচারের মুখোমুখি হবে, কিন্তু তাদের অপরাধের ধরন, বয়স ও মানসিক অবস্থা অনুযায়ী পুনর্বাসনের ব্যবস্থা থাকবে এবং নির্যাতন বা অন্য কোনো বিপদের সম্মুখীন হলে দ্রুত সহায়তা পাবে। এসব দিক বিবেচনায় নিয়ে কিশোর অপরাধীদের শাস্তির মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়। বয়স নির্ধারণে কিশোরের জন্ম সনদ অথবা অন্য কোনো নথি ব্যবহার করা হয়। যদি শিশু কোনো কারণে জন্ম সনদ বা অন্যান্য নথি প্রদান করতে না পারে, তবে আদালত কর্তৃক নির্ধারিত চিকিৎসার মাধ্যমে তার বয়স নির্ধারণ করা যেতে পারে। ১৮ বছরের কম বয়সি কিশোরদের জন্য কোনো কারাগার ব্যবহৃত হয় না। তাদের জন্য রয়েছে বিশেষ শিশু শোধনাগার বা সংশোধনাগার। কিশোর অপরাধীদের সাধারণত ১৮ বছর বয়স পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত শোধনাগারে রাখা হয়। ১৮ বছর বয়স পূর্ণ হলে কিশোর অপরাধীকে কারাগারে রাখা হয়। তবে তাকে প্রাপ্তবয়স্ক অপরাধীর সাথে রাখা হয় না। গুরুতর অপরাধের যেমন ধর্ষণ বা হত্যার মতো অপরাধে শিশুদের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি হতে পারে ১০ বছরের কারাদণ্ড। কিশোর অপরাধীদের আজীবন কারাদণ্ড বা মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার বিধান নেই।

বাংলাদেশে কিশোর অপরাধ রোধে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কাজ করে। সমাজসেবা অধিদফতর শিশুদের উন্নয়ন ও স্বাভাবিক জীবনে একীভূত করার লক্ষ্যে তিনটি (০৩) শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র পরিচালনা করছে। যার মধ্যে দুটি বালক ও একটি বালিকার জন্য। গাজীপুরের টংগী ও যশোরের পুলেরহাট দুটি বালক শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে অনুমোদিত আসন সংখ্যা যথাক্রমে ৩০০ ও ১৫০ জন হলেও বর্তমান নির্বাসিত বালক সংখ্যা ৬৯৩ ও ৩০৩ জন। গাজীপুরের কোনাবাড়ী বালিকা শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে অনুমোদিত আসন সংখ্যা ১৫০ জন হলেও বর্তমান নিবাসিত বালিকা সংখ্যা ৬৮ জন। এসব উন্নয়ন কেন্দ্রে প্রেরিত শিশুদের কেইস ওয়ার্ক, গাইডেন্স, কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে মানসিকতার উন্নয়ন, ডাইভারশন ইত্যাদি স্বীকৃত পদ্ধতিতে রক্ষণাবেক্ষণ, ভরণপোষন, প্রশিক্ষণ, দক্ষতা উন্নয়ন করে কর্মক্ষম ও উৎপাদনশীল নাগরিক হিসাবে সমাজে পুনর্বাসিত/আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তর কিশোর অপরাধ প্রতিরোধে সচেতনতামূলক কার্যক্রম (উঠান বৈঠক), কিশোর-কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্র কার্যক্রম, শিশু-কিশোর ক্লাব (সারাদেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রায় আট হাজার ক্লাব) পরিচালনা করে থাকে। যেখানে শিশু-কিশোরদের সঠিকভাবে গড়ে তোলা এবং অপরাধপ্রবণতা থেকে দূরে রাখতে এই অধিদপ্তর বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় কিশোরদের মানসিক ও শারীরিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে নানা কার্যক্রম পরিচালনা করে। এটি কিশোরদের জন খেলাধুলা, শিক্ষা এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের আয়োজন করে; যাতে তারা সঠিক পথ অনুসরণ করতে পারে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (ঘঐজঈ) কিশোর অপরাধ প্রতিরোধে সরাসরি কার্যক্রম পরিচালনা না করলেও তারা মানবাধিকার লঙ্ঘনে গুরুতর ঘটনাগুলিতে স্বপ্রণোদিতভাবে মামলা গ্রহণ করে এবা তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এছাড়াও কিশোর অপরাধ শোধনাগার এবং শিশু যত্ন-কেন্দ্র পরিদর্শন করে থাকে যা কিশোর অপরাধ প্রতিরোধ ও সংশোধনে পরোক্ষভাবে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। মাদকদ্রব নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার নিয়ন্ত্রণে মাদকবিরোধী কার্যক্রম পরিচালনা করে যা কিশোর অপরাধ প্রতিরোধে সহায়তা করে।

কিশোর অপরাধ প্রতিরোধে ব্যক্তিগত, পারিবারিক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকার সমাজের সম্মিলিত প্রচেষ্টা অত্যন্ত জরুরি। পরিবার হলো কিশোরদের ব্যক্তিত্ব গঠনের প্রধান ভিত্তি। তাই অভিভাবকদের উচিত সন্তানদের প্রতি যথাযদ মনোযোগ দেওয়া, তাদের মানসিক পরিবর্তন বুঝতে চেষ্টা করা এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা। পারিবারিক কলহ এড়িয়ে যাওয়া, নৈতিক শিক্ষা দেওয়া এবং তাদের আবেগ ও সমস্যার ব্যাপারে খোলামেলা আলোচনা করাই সঠিক দিকনির্দেশনার অন্যতম উপায়। কঠোর শাসন ও অতিরিক্ত স্বাধীনতার পরিবর্তে ভারসাম্যপূর্ণ আচরণ বজায় রাখলে কিশোরদের অপরাধপ্রবণতা থেকে দূরে রাখা সম্ভব।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে শুধু পাঠদানের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে শিক্ষার্থীদের নৈতিকতা ও মূল্যবোধ গঠনে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। বিদ্যালয়গুলোতে মানসিক পরামর্শদাতা (কাউন্সেলর) নিয়োগ করা এবং শিক্ষার্থীদের অপরাধমূলক কার্যকলাপের কুফল সম্পর্কে সচেতন করতে বিশেষ কর্মশালার আয়োজন করা প্রয়োজন। এছাড়া সহশিক্ষামূলক কার্যক্রম যেমন খেলাধুলা সাংস্কৃতিক চর্চা ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করা জরুরি যাতে তারা অপরাধমূলক কার্যকলাপের পরিবর্তে ইতিবাচক কর্মকাণ্ডের প্রতি আকৃষ্ট হয়।
কিশোর অপরাধ রোধে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং কমিউনিটি পর্যায়ে কিশোর অপরাধের কারণ ও প্রতিকার নিয়ে প্রচার চালানো প্রয়োজন। প্রযুক্তিনির্ভর যুগে ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহার কিশোর অপরাধ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই অভিভাবকদের উচিত সন্তানের অনলাইন কার্যক্রম সম্পকে সচেতন থাকা এবং সঠিকভাবে প্রযুক্তি ব্যবহারে উৎসাহিত করা।

কিশোর অপরাধ সমাজের জন্য একটি জটিল ও উদ্বেগজনক সমস্যা যা শুধু অপরাধী কিশোরের ভবিষ্যতকে অন্ধকারে ঠেলে দেয় না বরং সমাজের শান্তি স্থিতিশীলতাকেও ব্যাহত করে। তবে এই সমস্যার সমাধান কিশোরদের দোষারোপে নয় বরং তাদের সঠিক দিকনির্দেশনার মধ্যেই নিহিত। পরিবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সমাজ ও রাষ্ট্র একযোগে কাজ করলে কিশোরদের ভুল শুধরে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনা সম্ভব। তাদের বোঝাতে হবে যে, তারা সমাজের বোঝা নয়, আগামী দিনের সম্ভাবনা। অপরাধী কিশোরদের প্রতি সহানুভূতি সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে সঠিক পথে পরিচালনা করা আমাদের সকলের দায়িত্ব। যদি আমরা সবাই একসাথে এগিয়ে আসি তাহলে একটি সুন্দর নিরাপদ ও সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা সম্ভব; যেখানে প্রতিটি কিশোর আলোর পথে চলার সুযোগ পাবে। (পিআইডি ফিচার)

লেখক: আয়েশা সিদ্দিকা, সহকারী তথ্য অফিসার, আঞ্চলিক তথ্য অফিস, রংপুর।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *